নাজিয়া আন্দালিব প্রীমার লাইভ আর্ট পারফরমেন্স- 'Join and Experience THE KISS' আগামী শনিবার ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যে ৫ টা থেকে ৬:৩০ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে সিবিএল দেল ভিস্তা সেন্টারের 'ঢাকা গ্যালারি'তে । শিল্পরসিক দর্শকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে গ্যালারিটি ।
আমি আধুনিক সমকালীন আর্টের একজন দারুণ পাগল মানুষ । যদিও আধুনিক ধারার আর্টের চর্চা আমি করি না । আমার যদি প্যাশন বা ঝোঁক থাকতো আমি করতাম । কিন্তু যারা করে তাদেরকে আমি ভীষণ ভালোবাসি । আমি তাদের ভক্ত হয়ে যাই । আমি অসুস্থ না থাকলে অবশ্যই যেতাম, 'Join and Experience THE KISS' -এ অংশ নিতাম । আমি নিশ্চিত দারুণ একটা অভিজ্ঞতা হতো, তা থেকে বঞ্চিত হলাম । আমি এই লাইফ পারফরমেন্সের সফলতা কামনা করি । ধন্যবাদ প্রিয় প্রীমা, ধন্যবাদ রেসপেক্টেড পলাশ ভাই ।
.
আমি একটি আর্টিকেল লিখেছি । বর্তমানের আধুনিক সমকালীন আর্টের গতি-প্রকৃতি নিয়ে । আপনারা পড়বেন ভালো লাগবে ।
আ ধু নি ক তা আ মা র কা ছে . . .
১.
ক্রিয়েটিভ শিল্পকলার কথা ভেবে ভারতবর্ষে ইংরেজরা শিল্পশিক্ষার প্রবর্তন করেনি । ইংরেজরা তাঁদের সরকারি কাজকর্মে অর্থাৎ আর্কিওলজি, বোটানি, জুওলজি, ডাক্তারি, ড্রাফটসম্যান এবং কারুকলার জন্য ডিজাইনার তৈরির লক্ষে শিল্পশিক্ষার প্রবর্তন করেছিল । তবে এই শিক্ষার মধ্য দিয়ে বাঙালি শিল্পীরা কেউ অত্যন্ত দক্ষ হয়ে ওঠেন । যেমন, জয়নুল আবেদিন, সফিউদ্দিন আহমেদ, কামরুল হাসান ।… ১৯৪৭ দেশ ভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে জয়নুল আবেদিন যে শিল্পশিক্ষার প্রবর্তন করেন তা হুবহু ক্যালকাটা কলেজ অব আর্টস এন্ড ক্র্যাফটসকে অনুসরণ করে । আমরা আধুনিক আন্তর্জাতিক শিল্পকলার কথা কথায় কথায় বলি— ইউরোপ আমেরিকা ঘুরে আমিও তা বলতে পছন্দ করি ।
২.
আন্তর্জাতিকতার কথা বলতে গেলে কিছু কথা আমাদের মনে রাখা দরকার । আমরা যখন পঞ্চাশের দশকে এদেশে ব্রিটিশ একাডেমিক শিল্পকলায় পারদর্শী হবার চেষ্টা করছি— পশ্চিমে ফ্রান্সে তখন ইম্প্রেশনিজম, পোস্ট ইম্প্রেশনিজম এবং আধুনিক শিল্পচর্চার নানা পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হয়ে কিছু কিছু শেষ্ও হয়ে গেছে । গগ্যাঁ, ভ্যান গঘ, সেজানের নতুন আঙ্গিকের পেইন্টিংয়ের পরীক্ষানিরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে । পাবলো পিকাসোর কিউবিজমও শেষ । পিকাসো ‘দ্যে ম্যাদমোয়াজেল দ আঁভিয়’ এর মতো আধুনিক ছবি এঁকে ফেলেছেন ১৯০৭ সালেই । কিউবিজমও অতিক্রান্ত হয়েছে । ক্যান্দিনিস্কি, মন্দ্রিয়ান, পল ক্লি ছবির বিমূর্ততা নিয়ে এক্সপিরিমেন্ট সেরে ফেলেছেন । সারিয়েলিষ্টদের অতিবাস্তবতা ও স্বপ্ন নিয়ে ছবি আঁকা দাদাইস্টরা শিল্পের ভাঙ্গাচুরাও সেরে অন্যদিকে মন দিয়েছেন ।
৩.
ভাবুন সেই বিশের দশকেই মার্শাল ডুশাম্প প্রথম ইনস্টলেশন করেছিলেন । ষাটের দশকে আমেরিকান শিল্পী প্লায়েস ওল্ডেনবুর্গ যেসব অনবদ্য নরম ভাস্কর্য ও ইনস্টলেশান করেছেন আমরা তখন টেম্পারা, জল রং, ল্যান্ডস্কেপ, ফিগর ড্রইং, ফিগর পেইন্টিং কেউ কেউ অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট করছি ।
আমার তো মনে হয় সেই ধারাটিই বর্তমানেও এখানে ভালো ভাবেই আছে । আমরা এগোয়নি, বুদ্ধিবৃত্তির দিকে যাইনি । বৃটিশ একাডেমিক ধারাতেই আছি । আমরা এখনও দক্ষতাকেই দেখছি বেশি করে ।
আমাদের দেশের অধিকাংশ শিল্পীরা পশ্চিমি শিল্পকলাকে নিজেদের কাজে ভেতর নিয়ে এসেছেন, চেতনে বা অবচেতনে । নিজস্ব ঐতিহ্যের কথা ভাবিনি খুব একটা । আমাদের নিজস্ব ভ্রমণে যেতে পারলে একটা নিজেদের বহুমুখী ধারা তৈরি হতে পারতো । সেটা হয়নি । কিন্তু এককভাবে একমুখী ধারা কিছু হয়েছে । যেমন. শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, সফিউদ্দিন, সুলতান ও কামরুল হাসান । আমি বলব একমুখী ধারা তৈরিতে সবচেয়ে সফল হয়েছেন শাহাবুদ্দিন । নিজের জার্নিটাকে পাওয়ারফুল করতে একমাত্র তিনিই পেরেছেন ।
৪.
পশ্চিমি শিল্পকলার একটি ক্রমোন্নতির ইতিহাস আছে, ঐতিহ্য আছে । এবং তা আধুনিকতার দিকে এগিয়েছে দিনের পর দিন । বিশেষ করে শিল্পকলার মৌলিক রূপ ও গঠনকে কেন্দ্র করে । যেমন রিয়েলিজম থেকে ইম্প্রেশনিজম । আবার ইম্প্রেশনিজম, পয়েন্টিলিজম থেকে পোস্ট ইম্প্রেশনিজম । এরপর সিম্বলিজম, আর্ট নভো, এক্সপ্রেশনিজম তা থেকে ফবিজম এবং কিউবিজম, অরফিজম, ফিউচারিজম, সুপারম্যাটিজম, রুশ আঁভা গার্ড, জিওম্যাট্রিক অ্যাবস্ট্রাকশান, অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট, লিরিক্যাল অ্যাবস্ট্রাকশান, অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজম, আমেরিকান মর্ডানিজম, অ্যাকশন পেইন্টিং, পপ আর্ট, অপ আর্ট, নিও এক্সপ্রেশানিজম, মিনিমাল আর্ট, পারফরমেন্স আর্ট, ফটোরিয়ালিজম, হাইপাররিয়ালিজম, নিউ ইমেজ, নিউ আর্ট ইত্যাদি । এর মধ্যে ‘পারফরমেন্স' আর্ট’ সত্তর দশকে পশ্চিমে ব্যাপক প্রসার ঘটে । ‘নিউ ইমেজ’, ‘নিউ আর্ট’—এগুলো আশির দশকে পরিচিতি পায় । অর্থাৎ পশ্চিমে দাদাইজম থেকেই দেখি একটির পর একটি শিল্পসৌন্দর্যকে ভাঙ্গার প্রয়াস চালু হয়েছে । শিল্পকলার একমুখী বিবর্তনের ধারা সম্ভবত বিমূর্ত শিল্পকলার যুগেই শেষ হয়েছে । আধুনিক শিল্পকলার গতি এখন বহুমুখী । বলা যায়, পশ্চিমের আধুনিক সমকালীন শিল্পকলা আজ বিচিত্র রূপে, নানা আঙ্গিকে, নানা ভাবে প্রকাশ পাচ্ছে । আজকের পশ্চিমি আধুনিকতা এত বিচিত্র এবং এতটাই বহুমুখী যে তা কোনও সুনির্দিষ্ট পথনির্দেশ করে না ।
৫.
পশ্চিমের এই যে ক্রমবিবর্তন— একটি পর একটি ধারাবাহিকতা তা আমাদের নেই । শত শত বছরের ধারাবাহিকতা একেবারেই নেই । তবু একথা বলতে বাধা নেই যে, এদেশে তরুণ এবং সমকালীন আধুনিক শিল্পীরা যেসব কাজ করছেন, তা ভীষণভাবে উল্লেখযোগ্য এবং আধুনিকতার মাপকাঠিতেও আন্তর্জাতিক মানের । তার নান্দনিক গুণ, জীবনের সঙ্গে আন্তরিক যোগসূত্র, এবং সৃজনশীলতার গুণে তা যথার্থ এবং উন্নত মানের ।
৬.
একথা মনে রাখতে হবে পশ্চিমি শিল্পরসিক ও শিল্পসমালোচকেরা আমাদের মূল্যায়ন করবেন না, করেনও না । এই দায় তাদের নেইও । গোটা পৃথিবীতেই শিল্পকলা এখন ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত । আমাদের হয়তো শত শত মিলিয়ন ডলারে, বিলিয়ন ডলারে ছবির বেচা-কেনা হয় না । কিন্তু আমাদের ছবির বাজার আমাদেরকেই তৈরি করতে হবে । আমাদের অর্থনীতি যতো সমৃদ্ধ হবে আমাদের ছবির বাজার তত বড়ো হবে । তার আগে আমাদের একাধিক আধুনিক সমকালীন আর্ট মিউজিয়াম তৈরি করতে হবে । এর জন্য প্রশিক্ষিত উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত প্যাসনেবল আর্ট ক্রিটিক, আর্ট রাইটার, আর্ট-কিউরেটর আমাদেরকে তৈরি করতে হবে । কারণ আমরা যতই পশ্চিমির দিকে তাকাই না কেন, পশ্চিমি কলারসিক, আর্ট-কিউরেটর, রাইটার, ক্রিটিক আমাদের দিকে তাকাবে না ।
top of page
Search
Recent Posts
See Allসম্প্রতি কলকাতা থেকে প্রকাশিত অনলাইন ম্যাগাজিন ‘মনভাসি’তে প্রকাশিত আমার প্রবন্ধ; https://online.fliphtml5.com/bpdpf/ifml/#p=1 --মুস্তাফা...
3290
I first came to know about the elevator mishap at a shopping mall in the Uttara area a couple of hours back, which caused fire and...
1230
bottom of page
コメント